বিনামূল্যে আপডেটের জন্য সাবস্ক্রাইব করুন!

আমরা'স্প্যাম এর বিরুদ্দে অঙ্গীকারবদ্দ !

Tuesday, September 9, 2014

যে সকল কারণে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটি রুট করা প্রয়োজন

বার দেখা হয়েছে

বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে ‘অ্যান্ড্রয়েড’ অপারেটিং সিস্টেম সমৃদ্ধ স্মার্টফোনের ব্যবহারকারীই বেশি দেখা যায়। প্রযুক্তির সাথে দ্রুত তাল মিলিয়ে বাড়তে থাকা নানা রকম শক্তিশালী হার্ডওয়্যার ইম্প্রুভমেন্টস এবং হাজারো রকম অ্যাপস-এবং গেমসের কারণেই হোক বা এর ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেসের কারণেই হোক – অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন বর্তমানে বলা চলে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। আর অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের সাথে প্রযুক্তি শব্দ ‘রুট’ ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। কিন্তু সাধারণ ব্যবহারকারীদের অনেকেই এখনও জানেন না এর উপকারীতা বা প্রয়োজন সম্পর্কে। আমি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন অ্যান্ড্রয়েড ব্লগ বা পেজে লক্ষ্য করেছি অনেকেই ‘রুট করে লাভ কী’ বা ‘প্রয়োজন কী’ টাইপের উত্তর জানতে চেয়েছেন। আজকের ব্লগটি তাদের জন্যেই মূলত লিখতে বসা, চলুন জেনে নেই রুটের কিছু লাভজনক ফলাফল বা যে সব কারণে আপনার ডিভাইসটি আপনার রুট করা উচিৎ।


    


১। আপনি দোকান থেকে স্মার্টফোন কিনে আনার পর সেই স্মার্টফোনটির মালিকানা আপনিই পেয়ে থাকেন তবে পুরোপুরি মালিকানা আপনি তখনই পাবেন যখন আপনি আপনার ডিভাইসটি রুট করবেন। কেননা, রুট করার সাথে সাথে আপনি অ্যাডমিনেস্ট্রেশন ক্ষমতা পাবেন যার মাধ্যমে আপনি আপনার স্মার্টফোনটির রুট ফোল্ডারে পর্যন্ত এক্সেস করতে পারবেন এবং আপনার ইচ্ছেমত আপনার ডিভাইসটির প্রতিটি হার্ডওয়্যার ব্যবহার করতে পারবেন। আনরুটেড ডিভাইসগুলোতে ব্যবহারকারীরা ম্যানুফ্যাকচারার প্রতিষ্ঠানের দেয়া প্রিইন্সটল্ড সুবিধাগুলোই শুধু ব্যবহার করতে পারেন, তাও আবার একটি লিমিটেশনের মধ্যে থেকেই।
২। রুট করার পর আপনি আপনার স্মার্টফোনে হার্ডওয়্যার অনুযায়ী বিভিন্ন রকম কাস্টম রম ব্যবহার করতে পারবেন। এবং, এই কাস্টম রম ইন্সটল করার সুবিধাটিই স্মার্টফোন রুট করার সবচাইতে ভালো কারণ হিসেবে আপনি ধরে নিতে পারেন। আপনার স্মার্টফোনটি যখন স্টক রম অবস্থায় থাকে তখন অনেক সুবিধাই আপনি ব্যবহার করতে পারেন না যা আপনার হার্ডওয়্যার সাপোর্ট করে। কিন্তু, আপনি কাস্টম রম ইন্সটলেশনের মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনের আমূল চেহারাই (ইন্টারফেস) বদলে দিতে পারেন আপনার ইচ্ছে অনুযায়ী।
৩। আপনি স্মার্টফোন রুট করার মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনটিতে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রকম কাস্টম কারনেলও ব্যবহার করতে পারবেন। কাস্টম কার্নেল , কাস্টম রমের মত অতটা পরিচিত না পেলেও হার্ডওয়্যার টুইকিং এর ক্ষেত্রে কাস্টম কার্নেল ইন্সটল করাই হচ্ছে সবচাইতে ভালো পদ্ধতি। কাস্টম কার্নেল ইন্সটলের মাধ্যমে আপনি আপনার হার্ডওয়্যারের সর্বোচ্চটুকু বের করে নিতে পারবেন সহজেই।
৪। আপনি যদি খুঁতখুঁতে ধরণের মানুষ হয়ে থাকেন এবং আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসটি যদি আপনার ইচ্ছে মত কাস্টোমাইজ করতে চান তবে ‘রুট’ ছাড়া গতি নেই। কীবোর্ড থেকে শুরু করে নেটওয়ার্ক বারের আইকন – যা ইচ্ছে তাই আপনি আপনার মত করে সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে পারবেন।
৫। নতুন অবস্থায় অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনগুলোতে এরকম কিছু অ্যাপলিকেশন ইন্সটল করা থাকে যেগুলো বলতে গেলে কখনোই কাজে লাগেনা কিন্তু তা রুট মেমরীতে ইন্সটল করা থাকায় তা অপ্রয়োজনীয় হবার পরেও রম এবং কিছুটা র্যা ম দখল করে বসে থাকে। আপনি সহজেই আপনার স্মার্টফোনটি রুট করে সেই ক্র্যপওয়্যার গুলো আপনার ডিভাইস থেকে মুছে দিতে পারেন।
৬। প্রয়োজনীয় স্মার্টফোনে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় নানা রকম ডাটা, ফাইল ইত্যাদি রেখে থাকি। আমরা সাধারণ ভাবে সেগুলো ব্যাকআপ করতে সক্ষম হলেও ব্যাকআপের অনন্য রূপ আপনি তখনই দেখবেন যখন আপনি আপনার স্মার্টফোনটি রুট করবেন। রুটেড ডিভাইসকে টাইটানিয়াম ব্যাক-আপ এবং এরকম অনেক ব্যাক আপ টুলসের মাধ্যমে নিখুঁত ব্যাক-আপ করা যায়। এমনকি আপনি চাইলে আপনার স্মার্টফোনের পুরো সিস্টেমটিই ব্যাক-আপ করে রাখতে পারেন।
৭। নিশ্চয়ই অনলাইন বেসড কোন গেম বা অ্যাপ ব্যবহারের সময় বিরক্তিকর অ্যাডের সম্মুখীন আপনি অনেক বারই হয়েছেন? রুটেড ডিভাইসের জন্য এক্সপোসড ইন্সটলারের ছোট্ট একটা মডিউলই আপনাকে এই ঝামেলার হাত থেকে রক্ষা দিতে পারে মাত্র দুই-এক ক্লিকেই। তবে সেজন্য আপয়ার স্মার্টফোনটিকে রুট করে নিতে হবে।
৮। রুট করার মাধ্যমে শুধু মাত্র ইউজার ইন্টারফেসই নয়, আপনি পরিবর্তন করতে পারবেন আপনার ফোনের স্পিড এবং ব্যাটারি লাইফও বৃদ্ধি করতে পারবেন সহজেই।
৯। স্মার্টফোন রুট করার মাধ্যমে আপনি আপনার স্মার্টফোনটিকে বলা চলে অনেকটা স্বয়ংক্রিয় ভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন, আপনি নিশ্চয়ই ‘টাস্কার’ নামক একটি অ্যাপলিকেশনের নাম শুনেছেন যা আপনার হয়ে আপনার স্মার্টফোনটির অনেক কিছুই অটোমেট করে স্মার্টফোনের ব্যবহার অনেক সহজ করে দেয়। তবে, টাস্কার ব্যবহারের জন্য আপনার ফোনটি রুটেড হতে হবে না। কিন্তু আপনি যদি টাস্কার দিয়ে ৩জি টগলিং, সিপিইউ এর গতি পরিবর্তন, স্ক্রিন অন রাখা – এরকম নানা রকম টুইকস করতে চান তবে আপনাকে আপনার স্মার্টফোনটি রুট করতে হবে। এছাড়াও, প্রায় সকল ধরণের অ্যাপলিকেশনেই বিশেষ করে টুইকিং এর অ্যাপগুলোতে সাধারণ ফিচারের পাশাপাশি চমৎকার কিছু ফিচারও দেয়া থাকে যেগুলো স্মার্টফোন রুটেড না হলে ব্যবহার করা যায়না।
১০। রুটের মাধ্যমে আপনি আপনার স্মার্টফোনের লুকানো ফিচার গুলো আনলক করতে পারবেন এবং সেই সাথে আপনার স্মার্টফোনের সাথে ‘কম্প্যাটিবল’ নয় এরকম অ্যাপলিকেশনও ব্যবহার করতে পারবেন। গুগল প্লে তে আপনি যখন অ্যাপ বা গেমস ইন্সটল এর জন্য ব্রাউজ করেন তখন আপনি শুধু মাত্র সে সকল অ্যাপলিকেশন বা গেমসই দেখতে পান যেগুলো আপনার ডিভাইসের সাথে ‘কম্প্যাটিবল’। কিন্তু অনেক অ্যাপলিকেশন বা গেমস রয়েছে যেগুলো আপনার স্মার্টফোনের উপযোগী না দেখালেও সাইড লোড করলে বেশ ভালোভাবেই কোন রকম ত্রুটি ছাড়াই চলে। কিন্তু, গুগল প্লে তে সেগুলো প্রদর্শন না করায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনি জানতেই পারেন না যে অনেক চমৎকার চমৎকার অ্যাপলিকেশন বা গেমস থেকে আপনি বঞ্চিত হচ্ছেন। কিন্তু আপনি আপনার স্মার্টফোনটি রুট করলে এরকম কিছু মড আছে যেগুলো ইন্সটল করলেই আপনি গুগল প্লে’র সকল অ্যাপলিকেশন বা গেমস ইন্সটল করে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবেন।

আশা করি রুটিং এর ভালো দিক সম্পর্কে আপনি বুঝতে পেরেছেন। তবে আপনার যদি উপরের সুবিধা গুলো প্রয়োজন না হয়ে থাকে তবে আপনি আপনার ডিভাইসটি রুট না করলেও ক্ষতি নেই, বরং রুট করার পর এলোমেলো ব্যবহারের ফলে আপনার ডিভাইসটি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। রুটিং এর রয়েছে নানা রকম সুবিধা, তবুও আপনার দরকার না হলে এবং আপনি মোটামুটি দক্ষ না হলে আমার মতে রুট না করাই আপনার জন্য শ্রেয়। তবে, অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের শতভাগ মূলত স্মার্টফোন রুট করার পরেই পাওয়া যায়।

এই পোস্ট টি আপনার পছন্দ হলে শেয়ার করুন সামাজিক সাইটে
টেকটিউনসইউ →
ফলো করুন →
শেয়ার করুন →

0 comments: